যশোরে ইউপি মেম্বার ও যুবদল নেতা চন্টুর লাশ উদ্ধার
2015.03.20
যশোরের খেদাপারা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং যুবদল নেতা মেসবাহ উদ্দিন চন্টুর (৪০) লাশ বৃহস্প্রতিবার (১৯ মার্চ) সাতমাইল মানিকদি এলাকায় পাওয়া গেছে। তার আত্নীয় এবং স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। খবর ঢাকা ট্রিবিউনের।
তার ভাই রুহুল কুদ্দুস মন্টু বলেন, গত মঙ্গলবার পুলিশ চন্টুকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে, যশোরের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে পরদিন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে। মন্টু আরো জানান, তিনি পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তার সাথে দেখা করে অনুরোধ জানান চন্টুকে যেনো আদালতে সোপর্দ করা হয়।
কিন্তু পুলিশ তাকে আটকের কথা অস্বীকার করে। থানার কর্মকর্তা মোল্লা খবির আহমেদ বলেন যে পুলিশ চন্টুকে খুঁজে বেড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে ২টি হত্যা মামলা সহ ১৫ টি মামলার আসামী হিসেবে।
মন্টু সাংবাদিকদের জানায়, যে মাইক্রো বাসে করে চন্টুকে যশোরে আনা হয়েছে। তার ড্রাইভারকে থানার ওসি হুমকি দিয়ে বলেছে চন্টুকে যে আটক ও তার উপর নির্যাতন করা হয়েছে এ ব্যাপারে যেনো সে কারো কাছে মুখ না খোলে।
মনিরামপুর পৌরসভার মেয়র শহীদ ইকবাল ও জেলা বিএনপির জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জানায়, চন্টুকে পুলিশের হেফাজতে রেখে হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসীর ভুমিকায় পুলিশ নিজেরাই রাজনৈতিক নেতাদের খুন করছে।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা কালীন সময়ে বেশির ভাগ সময় চন্টু আটকের ভয়ে পালিয়ে বেড়চ্ছিলো। তার বিরুদ্ধে অনেকগুলি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশে হর হামেশা পরিসংখ্যান দিয়ে বলে আসছে, বাংলাদেশে পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু, ক্রসফায়ার কিংবা সাদা পোশাকের লোকজনের হাতে গুম সারা বছর ধরে নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের ওয়েব সাইটে গত ২০ মার্চ এশিয়া ডাইরেক্টর ব্র্যাড এডমসের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছে, " বাংলাদেশে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বিরোধী দলীয় নেতাদের খুঁজে বের করতে সরকার বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, সেটাই ইতিহাস হয়ে দাঁড়াচ্ছে।"
নিউইয়র্ক ভিত্তিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরো উল্লেখ করেছে, ১৬ মার্চ থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের কথা। ২০১২ সালে নিখোঁজ আরেক বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর হদিস সরকার ২ বছরের মধ্যেও বের করতে পারে নি।
২০০৭ সাল থেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ করে আসছে এই সংস্থাটি। র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে ৭ জন খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয় ফাস হবার পর তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সরকার, তা কেবল মিডিয়ার ব্যাপক ভুমিকার কারণে। জানায় ওয়াচ।