লস্কর-ই-তৈয়বা কমান্ডারের মুক্তিতে ভারতের ক্ষোভ

নয়াদিল্লি থেকে আলতাফ আহমেদ
2015.04.10
Ind-pak মুম্বাই আক্রমনের অভিযুক্ত মূল পরিকল্পনাকারী জাকি-উর রেহমান লাখভি মুক্তি পাওয়ায় ভারত ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। নয়াদিল্লিতে শিবসেনারা তার ছবির পোস্টারে আগুন দেয়। ১৪ মার্চ,২০১৫
এএফপি

মুম্বাই আক্রমনের অভিযুক্ত মূল পরিকল্পনাকারী জাকি-উর রেহমান লাখভি মুক্তি পাওয়ায় ভারত ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ২০০৮-এ এই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয় ও ৩ শতাধিক আহত হয়।

লস্কর-ই-তৈয়বার কমান্ডার জাকি-উর রেহমান লাখভির মুক্তিতে শুক্রবার ভারত ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। লাহোর হাইকোর্ট তাকে জেল থেকে মুক্তি দেয়।ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এই খবরে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।তিনি জানান, পাকিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সকল বিষয়ে সমাধান চায় এবং সেই ধারায় সম্পর্কের উন্নতি চায় তাহলে লাখভির মতো লোককে জেলে রাখতে হবে।

ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এক তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে লাখভির ব্যপারে হাত গুটিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনে। প্রায় ৬ বছর জেলে আটক রাখার পর তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি ডঃ শাকিল আহমাদ বেনার নিউজকে বলেন, “ কোর্টে প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার যথাযথভাবে মামলা পরিচালনা করেনি। কংগ্রেস আগামি অধিবেশনে ভারত সরকারের সঙ্গে লাখভির মুক্তির বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে”।

তিনি আরো বলেন, “মুম্বাই হামলা শুধু মুম্বাই-এর উপর নয়, এই হামলা ছিলো ভারতের উপর।আমরা চেয়েছি তাকে জেলে আটকে রাখা হোক, কিন্তু পাকিস্তান সরকার তাকে মুক্তি দিলো মুম্বাই ট্রায়েলের পরিসমাপ্তী ছাড়াই। ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম চালাতে প্রতিবেশ দেশ তাদের মাটিকে ব্যবহার করতে দেবেনা আন্তজার্তিক কমিউনিটির কাছে রাখা তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে”।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার এই মুক্তি ভারতের জন্য বেদনার বিষয় হয়ে উঠলো। তবে বলছেন, এটাকে যেন দুই দেশের আলোচনা্র ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত হিসেবে না দেখে ভারত।

রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং-এর সাবেক পরিচালক এ এস দাওলাত বেনার নিউজকে বলেন, “পাকিস্তানের উচিত ছিলো তাকে ছেড়ে দেয়ার আগে মুম্বাই হামালার মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি বিবেচনায় রাখা।তার এই মুক্তি ভারতের জন্য বেদনাদায়ক ব্যপার হয়ে থাকলো, যা দুই দেশের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করবে”।

“ ভারত সব সময়েই আশা করেছে যে মুম্বাই হামালার ট্রায়ালের পরিসমাপ্তী ঘটাতে পাকিস্তান ভুমিকা রাখবে, কিন্তু লাখভির মুক্তিতে ভারত সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হবে।তবে ভারতের উচিত হবেনা এই ইস্যুতে পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পথ বন্ধ রাখা”।

উল্লেখ্য, বৃহস্প্রতিবার লাহোর হাইকোর্ট লাখভির আটকাদেশ স্থগিত রাখে ও তাকে ছেড়ে দেয়ার আদেশ দেয়। রাওয়াল্পিন্ডির আদিয়ালা জেল থেকে তাকে পরে মুক্তি দেয়া হয়।ভারতের ধর্মীয় গ্রুপ জামায়াত-উলেমা হিন্দের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা হামিদ নোমানী বলেন, “কোর্টে লাখভিকে দোষী সাব্যস্ত করতে উপযুক্ত প্রমানাদি ও মুম্বাই আক্রমনের পিছনে তার ভুমিকার শক্ত সাক্ষী কোর্টের সামনে হাজির করতে পাকিস্তান সরকার ব্যর্থ হয়েছে”।

তারমতে, “ সন্ত্রাসবাদ অনৈসলামিক ও বেআইনী, পাকিস্তানকে অবশ্যই সন্ত্রাসবাদ দমনে কাজ করতে হবে এবং তা দুইদেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাবে”।

মুম্বাই হামলার ঘটনায় লাখভি (৫৫) ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আটক হন এবং তার সাথে যুক্ত আর ৬ জনকে ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর আটক করা হয়। ২০০৯ সাল থেকে ট্রায়াল শুরু হয়। তথ্যঃ টাইমস অভ ইন্ডিয়া।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।