জেএমবির ঢাকার আমিরসহ ৪ জঙ্গি গ্রেপ্তার

ঢাকা থেকে শাহরিয়ার শরীফ
2016.05.12
JMB-Militants620.jpg নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি)ঢাকা জেলার আমিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব । মে ১২, ২০১৬।
ফোকাস বাংলা

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ঢাকা জেলার আমিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র‍্যাব। সংস্থাটির দাবি, তাঁরা নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

গ্রেপ্তার হওয়া জেএমবি নেতাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র‍্যাব।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র‍্যাব ৬১২ জন সক্রিয় জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। ২০০৫ সাল থেকে এই বাহিনী জেএমবিসহ জঙ্গিদের দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

এই তথ্য জানিয়ে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান মুফতি মাহমুদ খান বেনারকে বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জামিনপ্রাপ্ত জঙ্গি সদস্যদেরও র‍্যাব নজরদারিতে রাখে।”

বৃহস্পতিবার সকালে র‍্যাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো মোবাইল ফোনের খুদে বার্তায় গ্রেপ্তারের এই খবর জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, রাজধানীর খিলগাঁও ও কমলাপুর এলাকা থেকে জেএমবির চারজনকে আটক করা হয়েছে।

র‍্যাবের দাবি, আটককৃতদের মধ্যে আবদুল বাতেন ওরফে খায়রুল ইসলাম ওরফে মামুনুল হক (২৮) জেএমবির ঢাকা জেলার আমির। বাকি তিনজন হলেন; মনির মোল্লা ওরফে মনির (২৯), মো. গোলাম কিবরিয়া ওরফে আক্তার (৬২) ও মো. রুম্মান খান ওরফে রুম্মান (২৭)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে র‍্যাব সদর দফতরে মুফতি মাহমুদ খান এক  সংবাদ ব্রিফিংয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হলেও গণমাধ্যমের সামনে তাঁদের বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে র‍্যাব।

“বুধবার রাত ১১টার দিকে খিলগাঁও এলাকা থেকে বাতেন ও মনিরকে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছে একটি পিস্তল, চারটি গুলি, ১৪টি পেট্রোল বোমা, স্প্রিন্টার ও জিহাদি বই পাওয়া যায়,” ব্রিফিংয়ে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি জানান, আক্তার ও বাতেনকে ফকিরাপুল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় একই দিন রাত একটায়। তাদের কাছ থেকে এক কেজি বিস্ফোরক, ১৪টি পেট্রোল বোমা ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে।

“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার ও রুম্মান রাজধানীতে নাশকতা করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনযোগে ঢাকায় আসার কথা বলেছে,” জানান মুফতি মাহমুদ।

র‍্যাব জানায়, ২০১৪ সালের ২ আগস্ট ‍ভারতের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের তদন্তে বাংলাদেশের জেএমবি নেতা শেখ রহমতুল্লাহ ওরফে মাছুম ওরফে সাজিদ এবং মো. নাঈমের নাম আসে। গ্রেপ্তার বাতেন সেই নাঈমের সহযোগী।

আর বাতেনের নেতৃত্বে মনির ঢাকার গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় জনবল বৃদ্ধি ও অর্থ সংগ্রহের কাজ করে আসছিলেন।

“সাম্প্রতিক সময়ে জেএমবি দুশ্চিন্তার নতুন কারণ হয়ে উঠেছে। র‍্যাব–পুলিশের তৎপরতায় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছিল। এখন তারা আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়,” বেনারকে জানান আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক এবং জঙ্গিবাদ বিষয়ে বিশ্লেষক নূর খান।

তিনি বলেন, জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রশ্ন যাতে না ওঠে সেসব বিষয়েও সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।