চার হুজি সদস্য গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার

ঢাকা থেকে জেসমিন পাপড়ি
2016.10.28
161028-Militants-Arrested620.png গাজীপুর থেকে চার হুজি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অক্টোবর ২৮, ২০১৬।
গাজীপুর পুলিশ

ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা গাজীপুর থেকে চার হুজি (হরকাতুল জিহাদ) সদস্যকে আটক করেছে জেলা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক গ্রুপ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ককটেল, পেট্রল বোমা, ইলেকট্রিক ডিভাইস, জিহাদি বই, অস্ত্র প্রশিক্ষণের লিফলেট উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

জেলা সদরের নান্দুয়াইন এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি জঙ্গলের ভেতর সুফিয়া কটেজের পরিত্যক্ত ভবনে অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের আটক করা হয়।

উল্লেখ্য, হুজি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। সাম্প্রতিক সময়ে এই জঙ্গি সংগঠনের কর্মকাণ্ড কম শোনা যায়। গুলশানে হলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন জঙ্গি হামলার ঘটনার পর জেএমবি এবং নিউ জেএমবি নামের দুটি জঙ্গি সংগঠন এখন ব্যাপকভাবে আলোচনায় রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ–সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় আসামিদের হাতে ছিল হাতকড়া ও মাথায় ছিল হেলমেট।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে। কিন্তু সন্দেহভাজন জঙ্গিদের এ সময় কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

আটককৃতরা হলো; গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন কাউলতিয়া মধ্যপাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মো. খাইরুল ইসলাম (২৬) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার সৈয়দপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে গোলাম কিবরিয়া খান (২৫।

খাইরুল ও কিবরিয়া পেশায় প্রকৌশলী। দু’জনই গাজিপুরের ইসলামিক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (আইইউটি) সাবেক ছাত্র। এর আগেও ওই ইনস্টিটিউটের কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়।

বাকি দুজনের মধ্যে একজন টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার খামারপাড়া এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে মো. শহিদ উল্লাহ (৪৩।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেনারকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শহিদ উল্লাহ পুলিশকে জানিয়েছে, সে আরাকান ফেরত জঙ্গি। জিহাদ করে শহীদ হওয়ার লক্ষ্যে সে মিয়ানমারের আরাকান গিয়েছিল।

আটক অপর জঙ্গি আমিনুল ইসলাম (৪৯) টাঙ্গাইলের আট পুকুর থানার বিশ্বাস বেতকা এলাকার আজিজুল হকের ছেলে। আমিনুল জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছে বেশ আগেই। সে স্কুল–কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচার চালাতো।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আটককৃতদের কাছ থেকে চারটি ককটেল, ইলেকট্রিক ডিভাইস, ১৪টি পেট্রল বোমা, বড় ছোরা, চাপাতি, বিভিন্ন জিহাদি বই ও অস্ত্র প্রশিক্ষণের প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ বেনারকে জানান, “জঙ্গিরা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে একত্রিত হয়ে শলাপরামর্শ করছিল।”

তিনি জানান, “বিভিন্ন জিহাদি বইয়ের ওপর ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মুখপাত্র শায়খ আল মুজাহিদ আবু মুহাম্মদ আল-আদনানী আশ-শামীর বিবৃতি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্র প্রশিক্ষণের কৌশল সংক্রান্ত কাগজপত্র সেখানে পাওয়া যায়।”

জয়দেবপুর থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বেনারকে জানান, “আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও সন্ত্রাস দমন আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাওয়া হবে।”

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।