তিস্তার পানি বন্টনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে মোদীর কাছে মমতার চিঠি
2015.03.04
তিস্তার পানি বণ্টনসহ দ্বিপক্ষীয় সব বিষয়ের নিষ্পত্তিতে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই চিঠির কথা উল্লেখ করে আজ বুধবার কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে লেখা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ—পানির ভাগ নিয়ে দুই পক্ষেরই কিছু দাবিদাওয়া রয়েছে। এই চুক্তি নিয়ে যে জট পাকিয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে কাটিয়ে ফেলা সম্ভব।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, এই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মনে করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এই দুটি চুক্তি সম্পাদন হতে পারে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্করের সদ্য সমাপ্ত ঢাকা সফরের আগে ওই চিঠি মোদীর কাছে পৌঁছায়।
মমতার ওই চিঠির সুর খুব ‘ইতিবাচক’ বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন।
বৈঠকে বসতে মোদীর কাছে সময়ও চেয়েছেন মমতা।
মমতা এখন মোদীর সঙ্গে বৈঠক করতে চাওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর আচরণে পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশসহ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মমতাকে সঙ্গে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদী।
মার্চে ভারত মহাসাগরীয় চার দেশ সফরের পর এপ্রিলে মোদী বাংলাদেশ সফরে আসতে চান বলে তার দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
“সে পর্যন্ত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত বিল পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষে একটি স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে পৌঁছাবে এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির কিছু জটিলতার অবসান হবে,” বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, মোদী ঢাকা সফরে মমতাকে সঙ্গে নিতে এবং বাংলাদেশ নিয়ে সব ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ঘোষণার সময় তাকে পাশে রাখতে চান।
“গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে পাশে রেখেছিলেন তেমনি মোদীও তাই করবেন।”
তিস্তায় যাতে উজান থেকে বেশি পানি আসে এবং পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ তাদের হিস্যা পায় সেজন্য মোদী সিকিমের সঙ্গে কাজ করছেন বলে অনেকের ধারণা। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
যদিও ২০১১ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন মমতা, তিনি তখন মনমোহনের সফরসঙ্গীও হননি। বরং প্রকাশ্যেই তিনি এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
কলকাতার আরকটি বাংলা দৈনিক আজকাল-এর অনলাইনে বলা হয়েছে, তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ১০ বছরের জন্য একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি করতে পারে ভারত সরকার। প্রয়োজনে পরবর্তী সময় এই মেয়াদ বাড়াতেও পারে। তবে কোন দেশ কতটা পানি পাবে, পরে তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পাশাপাশি তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিও সম্পাদন হতে পারে।