বন্যায় ১০ জেলায় আক্রান্ত ৩৬ লাখ
2024.08.22
ঢাকা
ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে তৈরি বন্যায় বাংলাদেশের ১০ জেলার প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
আকস্মিক এই বন্যার বিষয়ে কোনো পূর্বাভাস ছিল না বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “উজান থেকে হঠাৎ করেই ঢল নামে।”
সরকারের তথ্য বিবরণী অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হলো কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট ও লক্ষ্মীপুর।
“আমাদের বাসার সামনের রাস্তায় গলা পানি। এক তলা বাড়ি প্রায় ডুবে গেছে। এলাকায় কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই,” বৃহস্পতিবার বেনারকে বলেন খাগড়াছড়ি শহরের বাসিন্দা ডিসেন্সি চাকমা।
“আশেপাশে একতলা ভবনে যারা আছে তারা আমাদের ভবনের দোতালা-তিন তলায় এসে উঠেছে,” জানিয়ে তিনি বলেন, “সবাই একসাথে খুবই কষ্ট করে বিপদের সময় পার করছি।”
দুজনের মৃত্যু
বন্যার পানিতে ডুবে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় একজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ১০ জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় দিতে দুই হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতির সুযোগ না দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারত নদীর বাঁধ খুলে দেয়ায় এই আকস্মিক বন্যা হয়েছে, যা অমানবিক।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, নদীর বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে নয়, গোমতী নদীর অববাহিকা এলাকায় বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় বাঁধের ভাটির দিকের পানির প্রবাহের কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা সাংবাদিকদের জানান, “আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টি কমে আসতে পারে।”
পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকায় বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করছেন সেনা সদস্যরা। পাশাপাশি, চিকিৎসা সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিমও মোতায়েন করা হয়েছে।