অক্ষত অবস্থায় আফগানিস্তানে ব্র্যাকের দুই কর্মকর্তা উদ্ধার
2016.04.04

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের দুই কর্মকর্তা অপহরণের ১৮ দিন পর গতকাল সোমবার আফগানিস্তানে মুক্তি পেয়েছেন। অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পেয়ে তারা ব্র্যাকের কাবুল অফিসে অবস্থান করছেন।
“আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল দুই সহকর্মীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে। এটা সম্ভব হওয়ায় ব্র্যাক পরিবার খুবই আনন্দিত।,” বেনারকে জানান ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ।
এ ব্যাপারে সবরকম সহায়তা দেওয়ার জন্য তিনি দুই দেশের সরকার, কুন্দুজ ও বাগলান প্রদেশের গভর্নর, পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
উদ্ধার হওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন; আফগানিস্তানে ব্র্যাকের প্রধান প্রকৌশলী হাজি শওকত আলী (৫২) এবং প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম খান সুমন (৩৫)।
গত ১৭ মার্চ সংঘাত প্রবণ আফগানিস্তানের কুন্দুজ থেকে বাগলান যাওয়ার পথে অপহৃত হয়েছিলেন। অজ্ঞাত পরিচয়ের বন্দুকধারীরা গাড়ি থামিয়ে তাদের তুলে নিয়েছিল।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে পুনর্গঠনের কাজ করছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংস্থা, যাঁর প্রধান স্যার ফজলে হাসান আবেদ। আফগানিস্তানে ব্র্যাকের কর্মীরা এর আগেও বেশ কয়েকবার আক্রান্ত হন।
২০০৭ সালে নূরুল ইসলাম নামে এক ব্র্যাক কর্মকর্তা অপহৃত হওয়ার ৮৩ দিন পর মুক্তি পান। ২০০৮ সালের অক্টোবরে গজনি প্রদেশ থেকে অপহৃত হন দুজন। ১০ দিন পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
প্রতিটি উদ্ধারের ঘটনায় বড় অঙ্কের আর্থিক সংশ্লেষ থাকার গুঞ্জন থাকলেও এটা প্রকাশ করা হয় না।
কাবুল থেকে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া রিজিওনের আঞ্চলিক পরিচালক জালাল উদ্দিন আহমেদকে উদ্ধৃত করে ব্র্যাকের মিডিয়া ম্যানেজার মাহবুবুল আলম কবির বেনারকে জানিয়েছেন, “আলোচনার ভিত্তিতে স্থানীয় শুরা কাউন্সিলের সহায়তায় দুই সহকর্মী আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। তারা পাবনায় নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন।”
অপহরণের দুদিন পরই ঢাকা থেকে জালাল উদ্দিন আহমেদ কাবুলে যান। তিনি সেখানে উদ্ধারের বিষয়টি সমন্বয় করেন।
আফগানিস্তানে তালেবান জঙ্গিরা সক্রিয় থাকলেও ব্র্যাক কর্মকর্তাদের কারা ও কেন অপহরণ করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সহকর্মীরা উদ্ধার হওয়ায় ব্র্যাক কর্মকর্তারা খুশি হলেও তারা কীভাবে উদ্ধার হলেন সে সম্পর্কে কিছু বলেননি।
বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ পরিচালক আসিফ সালেহ জানান, “তারা ছাড়া পেয়েছেন। তারা সুস্থ আছেন, তবে শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল।”
এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ সালেহ বলেন, “আমরা স্থানীয় নেতাদের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করেছি। নানা মাধ্যমে তাদের উদ্ধারে আলোচনা হয়েছে।”
সুমন পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া গ্রামের বাসিন্দা, শওকতের বাড়ি একই জেলার ফরিদপুর উপজেলার হাংরাগাড়ি গ্রামে। শওকত ১০ বছর ধরে এবং সুমন চার বছর ধরে সিরাজুল আফগানিস্তানে কর্মরত রয়েছেন।