মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে দুই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

আলী নওফেল
2019.09.13
কুয়ালালামপুর
190913-MY-BH-MBangla620.jpg কুয়ালালামপুরে আটকদের কাছ থেকে উদ্ধার করা জাল মালয়েশিয় ওয়ার্ক পারমিট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখাচ্ছেন কর্মকর্তারা। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
[সৌজন্যে: মালয়েশিয়া অভিবাসন দপ্তর]

পাসপোর্ট জালিয়াত চক্রের সাথে যুক্ততার অভিযোগে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার অভিবাসন দপ্তর। এদের মধ্যে ‘মামা বাংলা’ নামে পরিচিত একজন জালিয়াত চক্রের হোতা বলেও জানান দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।

ওই দুই বাংলাদেশিকে বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক খায়রুল জামি দাউদ।

দেশটির আইন অনুযায়ী, অভিযোগ গঠন করে আদালতে হাজির করার আগ পর্যন্ত কোনো আসামির নাম প্রকাশ করা হয় না।

বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই বাংলাদেশির মধ্যে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় ৩৯ বছর বয়স্ক একজনকে। তাঁর কাছ থেকে চারটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, মালয়েশিয়ায় কাজের ছয়টি সাময়িক অনুমতিপত্রের স্টিকার এবং ছয়টি আই-কার্ড উদ্ধার করা হয়।

“ধারণা করা হচ্ছে এগুলো সবই জাল,” বিবৃতিতে বলেন দাউদ।

তিনি জানান, পরবর্তীতে ফাঁদে ফেলে জালিয়াত চক্রের হোতা ২৫ বছর বয়সী ‘মামা বাংলাকে’ গ্রেপ্তার করা হয়।

মামা বাংলা ৫০ থেকে ২০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের (এক হাজার থেকে চার হাজার বাংলাদেশি টাকা) বিনিময়ে একেকটি জাল ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করত বলে জানান তিনি।

“ধারণা করা হচ্ছে এই জালিয়াত চক্রটি কুয়ালালামপুরের আশেপাশে ২০১৭ সাল থকে কার্যক্রম চালাচ্ছে। অভিবাসন দপ্তর মামা বাংলাকে ফাঁদে আটকানোর জন্য জালান মুনশি এলাকায় তাঁর সাথে একটি বৈঠক আয়োজন করে। সেখান থেকেই তাঁকে দুইটি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ গ্রেপ্তার করা হয়।” বিবৃতিতে বলেন দাউদ।

মামা বাংলাকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেয়া তথ্যমতে কুয়ালালামপুরের জালান পুত্রামাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৭টি বিদেশি পাসপোর্ট ও ছয়টি সাময়িক কাজের অনুমতিপত্র উদ্ধার করা হয়।

দাউদ জানান, ওই স্থান থেকে কম্পিউটার, প্রিন্টার ও স্ক্যানারের মতো জাল নথিপত্র তৈরির সঞ্জামও উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিবাসন দপ্তরের জিন্মায় রাখা হয়েছে। মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী অভিযোগ গঠনের আগে সর্বোচ্চ ২৮ দিন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে মালয়েশিয়ার ১৪টি আটক কেন্দ্রে বর্তমানে মোট ৯ হাজার ৫৩২ জন অবৈধ অভিবাসী আটক রয়েছেন বলে খাইরুল জামি দাউদের বরাত দিয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায় মালয়েশিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা বারনামা।

এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ হাজার বিদেশিকে মালয়েশিয়া ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে দাউদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার আরেক প্রতিবেদনে বারনামা জানায়।

ওই বিদেশিদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার পর বাংলাদেশিদের সংখ্যা সর্বোচ্চ বলেও জানায় ওই প্রতিবেদন।

এদের কেউ কেউ ভ্রমণ ভিসায় মালয়েশিয়া পৌঁছালেও দেশটিতে থাকার জন্য হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তাছাড়া মালয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য তাঁদের কাছে যথেষ্ট টাকা পয়সাও ছিল না।

দাউদ বলেন, “তাঁদের কেউ কেউ ভ্রমণ ভিসায় কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন বলে আমাদের সন্দেহ।”

এছাড়া অনেকে কাজের অনুমতিপত্র নিয়ে মালয়েশিয়া অবতরণ করলেও নিয়োগদানকারী কর্তৃপক্ষ তাঁদেরকে স্বীকার করেনি। ফলে তাঁদেরকে ‘প্রবেশের অনুমতি নেই’ নোটিস দিয়ে বিমানবন্দর থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়, জানান দাউদ।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।