৩০ নভেম্বর মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশে আসছেন পোপ ফ্রান্সিস
2017.08.28
ঢাকা

আপডেট: ২৯ জুন, ইস্টার্ন টাইম জোন সকাল ১১:১০
সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা নিয়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ৩০ নভেম্বর ঢাকা আসছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি একাধারে বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু এবং ভ্যাটিক্যানের রাষ্ট্রপ্রধান।
সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পোপের আগমন বার্তা ঘোষণা করেন ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও। সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও একই ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন দিন বাংলাদেশে অবস্থান করবেন তিনি।
বাংলাদেশে প্রবেশের পূর্বে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার ঘুরে আসবেন পোপ ফ্রান্সিস। পোপের এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন মিয়ানমারে সহিংসতায় বিতাড়িত হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু আশ্রয়ের সন্ধানে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
সংবাদ সম্মেলন
ঢাকার কাকরাইলে আর্চবিশপ হাউসে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক। সম্মেলনে ঢাকায় নিযুক্ত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত ও ডিপ্লোমেটিক কোরের ডিন আর্চবিশপ জর্জ কোচারি উপস্থিত ছিলেন।
কার্ডিনাল বলেন, “রাষ্ট্রীয় সফরের পাশাপাশি ক্যাথলিকমণ্ডলীর প্রধান ধর্মগুরু ও প্রধান পালক হিসেবে পোপ ফ্রান্সিস সফর করবেন।”
বাংলাদেশে আসার আগে তিনি মিয়ানমার সফর করবেন বলে জানান প্যাট্রিক ডি রোজারিও। ২৭ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি মিয়ানমারে অবস্থান করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচারি বলেন, পোপ ফ্রান্সিসকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। তিন দিনের এই সফরে পোপ নাগরিক সমাবেশ, সমাজের দুস্থ মানুষের প্রতিনিধি ও তরুণদের সঙ্গে দেখা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয় এই সফরে পোপ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
বাংলাদেশ সফর বাস্তবায়নে তাঁর সফরের অ্যাডভান্স টিম এরই মধ্যে ঢাকা ঘুরে গেছে। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রোটোকল উইংয়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে গেছেন।
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান।
পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ তিনি।
গত বছরের অক্টোবরে তিনি যে ১৭ জনকে কার্ডিনাল হিসেবে মনোনীত করেন, তাদের মধ্যে ঢাকার আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও একজন। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম কার্ডিনাল।
ঢাকায় কর্মসূচি
ঢাকা সফরকালে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন পোপ।
তাঁর কর্মসূচিতে থাকছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, একটি নাগরিক সমাবেশ, বাংলাদেশের কার্ডিনাল-আর্চবিশপদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, ক্যাথলিকমণ্ডলীর দুস্থ, প্রতিবন্ধী, অসুস্থ মাদকাসক্ত ও অনাথদের জন্য পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, চার্চের যুবসমাজের প্রতিনিধি ও চার্চ পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকমণ্ডলীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ।
সংবাদ সম্মেলনে পোপের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে একটি লোগো ও একটি ওয়েবসাইট (www.popebd.info) উদ্বোধন করা হয়। এই ওয়েবসাইটে পোপের বাংলাদেশ সফরের সব তথ্য পাওয়া যাবে।
এর আগে ১৯৮৬ সালের ১৯ নভেম্বর পোপ দ্বিতীয় জন পল এক রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন।