ধর্মের দোহাই দিয়ে রোহিঙ্গাদের যুদ্ধের আদেশ দিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী
2024.04.11
২৫ ফেব্রুয়ারি মাঝরাতের আগ মুহূর্তে ঘরের দরজা খুলে রোহিঙ্গা তরুণ আলী দেখেন মিয়ানমার জান্তা সৈনিকরা তাঁর দিকে বন্দুক ধরে আছেন। তাঁরা দেশটির সেনাবাহিনীতে তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে এসেছেন।
বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সাথে লড়াইয়ে বাধ্যতামূলকভাবে তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে যে অভিযান চালাচ্ছে, তার সর্বশেষ শিকার রোহিঙ্গারা, যাদের একজন আলী। নিরাপত্তাজনিত কারণে এই প্রতিবেদনে আলীর মূল নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সৈন্যরা আলীকে ঠেলে গাড়িতে উঠিয়ে বুথিডংয়ে লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ৫৩৫ এর সামরিক ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরদিন একজন কমান্ডার নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নেবার আহ্বান জানান।
প্রস্তাবে বলা হয়, যদি রোহিঙ্গারা একটি মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করে আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে লড়াই করে তবে তাঁদেরকে আইনগতভাবে নাগরিক মর্যাদা দেয়া হবে। পাশাপাশি, তাঁদের প্রত্যেককে ১০ লাখ কিয়াট (৪৭৬ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৩ হাজার টাকা) বেতনও দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে আরাকান আর্মি।
বেনারনিউজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রেডিও ফ্রি এশিয়াকে (আরএফএ) আলী বলেন, “কীভাবে বন্দুক ধরতে হয়, গুলি করতে হয়, কীভাবে হাঁটতে হয় এবং কীভাবে যুদ্ধের সময় জখম এড়াতে হয়, তারা এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।”
তিনি বলেন, ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে রোহিঙ্গাদের মিলিশিয়া বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে বলেও জানানো হয়।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ১০ দিন পর পালিয়ে এসে আলী আরএফএকে বলেন, “তিনি (কমান্ডার) আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে আমাদেরকে ক্যাম্পে ধর্মের বিবেচনায় আনা হয়েছে। তিনি নবী মোহাম্মাদকেও উদ্ধৃত করে বলেন, আমাদেরকে আমাদের ইমানের জন্য লড়তে হবে।”
প্রসঙ্গত, জাতিগত এবং ধর্মীয় পরিচয়ের কারণেই মিয়ানমারে নাগরিকত্ব হারানো এবং সেনাবাহিনীর হাতে দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচারের শিকার হয়েছেন রোহিঙ্গারা। এখন ধর্মের দোহাই দিয়েই তাঁদেরকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে লড়তে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
হাজার হাজার রোহিঙ্গা হত্যা ও ধর্ষণ এবং নির্বিচারে মানবতাবিরোধী অত্যাচার ও গণবিতাড়ন চালিয়ে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ‘তাতমাদো’ বিশেষভাবে কুখ্যাত।
সেই তাতমাদো এখন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরকে জান্তা বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী মিয়ানমার সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ক্রমবর্ধমান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই প্রতিবছর ৫০ হাজার তরুণ নারী পুরুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করার জন্য চলতি বছরের শুরুর দিকে একটি খসড়া আইন জারি করে তারা।
এর পর থেকে দেশ জুড়ে হাজার হাজার বেসামরিক লোককে বলপূর্বক সামরিক বাহিনীতে যুক্তরা করা হয়েছে, এই পরিস্থিতি এড়াতে দেশটির অসংখ্য মানুষ পালিয়ে গেছেন।
সামরিক প্রশিক্ষণ থেকে পালানো মিয়ানমারের নাগরিকদের বর্ণনা অনুসারে, সেনাবাহিনী বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক নিয়োগ দিচ্ছে।
ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান লুইন আরএফএকে বলেন,
“রোহিঙ্গাদের সামরিক চাকরিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাঁদের বেআইনিভাবে আটক করা হচ্ছে এবং সামনের সারিতে যুদ্ধে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”
“এভাবে আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে,” বলেন তিনি।
সেনা ঘাটতি পূরণ
অক্টোবরের শেষের দিকে আরাকান আর্মি, মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি অন্যান্য জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও জান্তা বিরোধী বাহিনীর সাথে যৌথভাবে যুদ্ধে নেমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জান্তা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করতে শুরু করে। ‘তিন ভ্রাতৃত্ব জোট’ দিয়ে শুরু হওয়া “অপারেশন ১০২৭” প্রাথমিকভাবে উত্তর শান রাজ্যে জান্তা বাহিনীকে মারাত্মকভাবে পর্যুদস্ত করে। তাতমাদো সদস্যদের ব্যাপক আত্মসমর্পণের ঘটনা ঘটে এবং বিদ্রোহী জোট বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নেয়।
মার্চ মাসে একটি জাতিগত সেনাদল চীন সীমান্তের কাছে একটি প্রধান বাণিজ্য পথ দখল করে নেয়। অতি সম্প্রতি আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরাঞ্চলের মধ্যে ছয়টি দখল করেছে। এপ্রিলের শুরুর দিকে জান্তা সামরিক বাহিনীর ১৭০টি শিবির আরাকান আর্মির দখলে চলে যায়।
রাখাইনে ক্রমবর্ধমান ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে জান্তাবাহিনী অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত শিবির থেকে বহু রোহিঙ্গাকে ধরে নিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করছে। এর আগে রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার চালিয়ে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করার পর থেকে রোহিঙ্গারা বছরের পর বছর ধরে শিবিরগুলোতে অবরুদ্ধ হয়ে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এখন মিয়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে সেনাবাহিনীতে চাকরির বিনিময়ে চলাফেরার স্বাধীনতার পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণে খাদ্য ও অর্থের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিদারুণ দরিদ্র এই জনগোষ্ঠীকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে।
পুরো পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করা একজন রোহিঙ্গা নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরএফএ-কে জানান, “নগদে এক বস্তা চাল এবং ৫০ হাজার কিয়াট পাওয়ার আশায় তারা প্রথম দফা প্রশিক্ষণের জন্য স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছিল।”
“এরপর কেউ কেউ দ্বিতীয় দফার জন্যেও ফিরে গেছে। তবে যুদ্ধের সময় সামনের সারিতে নিয়োজিতদের প্রাণহানির ঘটনা দেখার পর অনেকে ভয়ে তৃতীয়বার অংশগ্রহণ করতে দ্বিধা করেন,” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য এলাকার প্রতিটি গ্রাম থেকে বড়জোর দুই বা তিনজন তরুণকে ডাকা হলেও রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবির থেকে শত শত তরুণকে ধরে নিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে চওপচু, সিটওয়ে এবং বুথিডং শহর থেকে বাসিন্দারা জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে তালিকাভুক্তির খবর দিয়েছেন।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এসব এলাকার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে এক মাসের ব্যবধানে তিনটি পৃথক ব্যাচে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
এর আগের এক প্রতিবেদনে আরএফএ জানিয়েছিল, রোহিঙ্গা বন্দিরা সামরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে না চাইলে তাঁদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং তারা পালিয়ে গেলে তাদের পরিবারকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে জানানো হয়।
রোহিঙ্গা প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অল্প প্রশিক্ষণের কারণে সম্মুখ সারির যুদ্ধে নিয়োজিত রোহিঙ্গারা অস্বাভাবিক উচ্চ হারে মারা যাচ্ছেন।
তাঁরা জানান, “প্রায় ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ৬১ জন মারা গেছেন এবং ৪১ জন যখম হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।”
আরাকান আর্মিও বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা যোদ্ধা নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে। ১৭ মার্চের এক প্রেস বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা যখন রথেডংয়ের জান্তা ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন তারা বেশ কিছু রোহিঙ্গার মৃতদেহ পেয়েছে, যারা সংক্ষিপ্ত সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিল এবং তাঁদের সামনের সারিতে মোতায়েন করা হয়েছিল। ঐ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিহত ব্যক্তিদের ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
প্রশিক্ষণ দেয়া প্রায় ১০০০ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাদের নিজ নিজ আশ্রয় শিবিরে সংরক্ষিত ফৌজ হিসেবে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, বাকি রোহিঙ্গাদের অবস্থা এখন অজানা। তিনি বলেন, জান্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবির থেকে পুনরায় ডেকে পাঠানোর কারণে তাদের কেউ কেউ আবার যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
আইন লঙ্ঘন
যে রাতে আলীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেটি ছিল রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যোগদান অভিযানের জন্য ব্যস্ত সময়।
অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দাদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, শুধু ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বুথিডং শহরের চারটি গ্রাম ও ওয়ার্ড থেকে ৩৯ জন রোহিঙ্গাকে লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন নং ৫৩৫ এর অধীনে প্রশিক্ষণে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
স্থানীয়রা বলছেন, লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ৫৪২ চওপচু শহরে কিয়াউক তা লোন রোহিঙ্গা শিবির থেকে প্রায় ১০০ জন রোহিঙ্গাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শুরু হয়েছিল।
তাঁদের পঞ্চাশ জনকে ২৮ মার্চ সামরিক ইউনিফর্ম এবং অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে চারটি সেনা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল বলে জানান কিয়াউক তা লোন গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণী।
আইনজীবীদের মতে, নাগরিকত্ব না থাকায় রোহিঙ্গারা আইনত সেনাবাহিনীতে নিয়োগের জন্য যোগ্য হওয়া উচিত নয়। কিন্তু জান্তা অন্যভাবে তার নিজস্ব বাধ্যতামূলক সেনানিয়োগ আইন ব্যবহার করছে।
সামরিক খসড়া আইনে বলা হয়েছে, প্রত্যক্ষ সেনাবাহিনীর চাকরির জন্য যোগ্য ব্যক্তিরা হলেন ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারী। ডাক্তার, প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদদের মতো পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের জন্য ১৮ থেকে ৪৫ বছর এবং নারীদের জন্য ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী হলে অবশ্যই পরিষেবা দিতে হবে। তবে কিয়াউক তা লোনের বাসিন্দা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে তালিকা করা হয়েছিল বয়সের সীমার অনেক বাইরে গিয়ে।
“তারা ১৮ থেকে ৪০ বছরের বেশি বয়সী যুবকদেরও ধরে নিয়ে যায়। এমনকি ৫৫ বছর বয়সী লোকদেরও প্রশিক্ষণের জন্য ডাকা হয়েছিল। সবাই মুসলমান,” বলেন ওই তরুণী।
আরএফএ স্বতন্ত্রভাবে এসব বর্ণনার নিশ্চয়তা পরীক্ষা করতে পারেনি। পিপলস মিলিটারি সার্ভিসে তলব করা সংক্রান্ত রাখাইন প্রাদেশিক কমিটির একজন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তিনি এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সঠিক ব্যক্তি নন। অন্যদিকে রাখাইন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল এবং জান্তার মুখপাত্র হ্লা থেইন আরএফএ’র ফোনে সাড়া দেননি।
সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ বর্বরতার শিকারদের একজন প্রতিনিধি আলী, যিনি প্রশিক্ষণ শিবির থেকে পলানোর কারণে হত্যা করা হতে পারে বিধায় আত্মগোপনে আছেন।
তিনি বলেছেন, “তারা [২০১৭ সালে আমাদের বিরুদ্ধে] হামলা চালিয়েছিল, আর এখন তারা আমাদের বোঝানোর জন্য সদয় শব্দ ব্যবহারের চেষ্টা করছে। আমি সত্যিই তাদের ঘৃণা করি, কারণ তারা আমাদের জীবন ধ্বংস করেছে।"