জঙ্গি তামিমের ডিএনএ নমুনা বাবা ও বোনের সঙ্গে মিলেছে

ঢাকা থেকে শাহরিয়ার শরীফ
2016.11.08
Dhaka
 তামিমের বিকল্প চারটি ছবি। ফাইল ফটো।
নিউজরুম ফটো

গুলশান হামলার পর বহুল আলোচিত জঙ্গি নেতা ও পুলিশের অভিযানে নিহত তামিম চৌধুরীর ডিএনএ নমুনা কানাডায় অবস্থানরত তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে গেছে। পুলিশ বলছে, নিহত তামিমকে নিয়ে আর কোনও জল্পনা–কল্পনার সুযোগ নেই।

গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে পুলিশের জঙ্গি দমন অভিযানে তামিম ও তাঁর দুই সহযোগী নিহত হয়। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ডিএনএ নমুনা মেলার পর এখন ওই মরদেহ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বেনারকে জানান “আইনগতভাবে তামিম চৌধুরীর লাশ শনাক্তের জন্য তার ডিএনএ নমুনা নিয়ে যায় কানাডার সরকার।”

উল্লেখ্য, তামিম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক। এ জন্য দেশটির পক্ষ থেকে তার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে প্রচুর প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান এক প্রশ্নের জবাবে জানান যে, কানাডা থেকে ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন কয়েকদিন আগে তাঁদের হাতে এসেছে।

গত ৪ অক্টোবর অনলাইনে প্রকাশিত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সাময়িকী রুমাইয়াহতে তামিমকে তাদের ‘বাংলার সামরিক ও গুপ্ত হামলার সাবেক প্রধান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাঁর সাংগঠনিক নাম আবু দুজানা।

আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে তামিমকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলে পরিচয় দেওয়া হয়। তবে সরকার বা পুলিশ বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব স্বীকার করে না। পুলিশ বলে আসছে, তামিম নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা।

গত ১ জুলাই গুলশান ও তার এক সপ্তাহের মাথায় শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ঘরছাড়া তরুণদের তালিকা প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে তামিম চৌধুরীর নাম ছিল।

কানাডার পাসপোর্টধারী তামিম ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে নিখোঁজ ছিল। সে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি। মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তামিমের বাবা শফি আহমদ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সপরিবারে কানাডায় চলে যান।

গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার একটি বাড়িতে পুলিশের অভিযানে তিন জঙ্গি নিহত হওয়ার পর তাদের একজন তামিম চৌধুরী বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এর আগে ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যার পর মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তামিমকেই চিহ্নিত করেছিল পুলিশ।

এরপর তামিমের বিষয়ে তথ্য দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। তামিমের চারটি বিকল্প ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। গত ২৭ আগস্টের অভিযানের পর আইজিপি শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, তামিম চৌধুরী সিরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল।

পুলিশের মহাপরিদর্শক তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন। তখন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম। নিও জেএমবির নেতৃত্ব দিচ্ছে সে।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।