আঁকা ছবিতে খালেদা জিয়ার জেল জীবন
ছবি এঁকেছেন: রিবেল পিপার

এই দৃশ্যায়নের ছবিগুলো এঁকেছেন রেডিও ফ্রি এশিয়ার রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট ওয়াং লিমিং, যিনি ‘রিবেল পিপার’ ছদ্মনামে কার্টুন এঁকে থাকেন। এই দৃশ্যায়নে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছন ঢাকা থেকে কামরান রেজা চৌধুরী।

বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া। দুর্নীতির মামলায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দী। যদিও এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিসেবে দাবি করে আসছেন তিনি।
কারাগারে খালেদা জিয়ার কক্ষে যাবার অনুমতি কারো নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতৃবৃন্দের বর্ণনা অনুযায়ী বেনারনিউজ তাঁর কারা জীবন দৃশ্যমান করার চেষ্টা করেছে।
খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। ২০১৬ সালে সকল বন্দীকে স্থানান্তরের পর -২২৮ বছরের পুরোনো এই কারাগারে খালেদা জিয়াই একমাত্র বন্দী।
পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় খালেদা জিয়ার কক্ষটি অবস্থিত।
খালেদা জিয়ার ঘরটি দৈর্ঘ্যে দশ ও প্রস্থে ৮ ফুট।
ঘরে খালেদা জিয়ার জন্য একটি টেলিভিশনও রয়েছে। যেটিতে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেখতে পারেন।
খালেদা জিয়ার বিছানাটি দৈর্ঘ্যে ছয় ও প্রস্থে ছয় ফুট। ঘরটিতে চেয়ার, টেবিলসহ ব্যক্তিগত ব্যবহার্য অন্যান্য জিনিস রয়েছে বলে বেনারকে জানিয়েছেন কারা কর্মকর্তারা।
জেলখানায় খালেদা জিয়ার কক্ষের পরিবেশ সম্পর্কে গত বছর ১৭ জুন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ঢাকা সেন্ট্রাল জেল সত্যিকার অর্থে জঘন্য। খালেদা জিয়ার ঘরে বড়ো বড়ো ইঁদুর। আপনারা শুনলে অবাক হবেন, তাঁর ঘরে এক রাতে বিড়াল বড় ইঁদুর ধরেছে। তারপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে একজন সুবিধাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেলখানায় খালেদা জিয়ার ঘরটি খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সব সময় জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর খেয়াল রাখেন।
আদালতে হাজিরা না থাকলে খালেদা জিয়া সাধারণত দুপুর পৌনে দুইটা থেকে দুইটার মধ্যে ঘুম থেকে ওঠেন। তিনি “ঘুম থেকে উঠে সাধারণত স্যুপ খান,” বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কারা কর্মকর্তারা জানান, খালেদা জিয়া ফল ও জুস পছন্দ করেন।
খালেদা জিয়া নিজের পছন্দমতো একটি পত্রিকা পান। তিনি দৈনিক যুগান্তর পড়েন বলে জানান কর্মকর্তারা।
খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য কারাগারের ভেতরেই একটি অস্থায়ী আদালত স্থাপন করেছে সরকার। আদালত কক্ষটি দৈর্ঘ্যে ২০ ও প্রস্থে ১২ ফুট।
দুইজন পুলিশ সদস্য হুইল চেয়ার ঠেলে খালেদা জিয়াকে নিজের কক্ষ থেকে আদালতে উপস্থিত করেন। ফাতেমা আদালতেও খালেদা জিয়ার সাথে থাকেন। যদিও খালেদা জিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আদালতে উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি জানান।
আদালতে তাঁর সাথে দলের নেতৃবৃন্দ ও আইনজীবীরা কথা বলতে পারেন।
গত ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে গত অক্টোবরেও তাঁকে মাসখানেকের জন্য এই হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তাঁর স্বাস্থ্য সর্ম্পকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বেনারকে বলেন, “ডাক্তাররা আমাদের যা বলেছেন সে অনুযায়ী খালেদা জিয়ার অধিকাংশ স্বাস্থ্য সমস্যা পুরোপুরি ভালো হবে না। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।”